“ঝড়ের পরের হাওয়া” একটি নির্জন পার্ক বেঞ্চে মিলনের গল্প: শারমিন ও রহিমের টেবু ভেঙে, দ্বিধা-অনুভূতিতে ভরা মন একে অপরের চোখে আস্তে আস্তে ক্লান্তি ভুলে যায়। প্রথম চক্ষে ভেসে ওঠা অচেনা উষ্ণতা, স্বীকারোক্তির আবির্ভাব, এবং ভুল-ত্রুটির মধ্যেও অনড় বিশ্বাসের স্পন্দনে গড়ে ওঠে তাদের ভালোবাসার গান—এক Bangla Choti Golpo, যা হৃদয়ের অন্তস্তলে দোলা দেয়।
ঝড়ের পরের হাওয়া
শারমিনের চোখ ভেসে উঠল সেই বিকেলের স্মৃতিতে। গান্ধী উদ্যানের পার্ক বেঞ্চে বসে, ভেতরে কতটা অচেনা দ্বিধা আর তিক্ততা জমা ছিল, সে একাই জানত। পেছন থেকে আসা দমবন্ধ করা গরমের মধ্যে হঠাৎ ঠান্ডা হাওয়া এসে হালকা করে তার চুল ছুঁয়ে গেল। সেও বুঝতে পারল, আজ তার জীবনে কিছু বদল আসছে।
“আরে, কতক্ষণ বসে আছ?”– পেছন থেকেই ভদ্রলোকের কণ্ঠস্বর শুনতে পেল শারমিন। মুখে অচেনা উষ্ণতা ছড়িয়ে গেল।
তিনি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালেন। হেসে বললেন, “আমরা কিন্তু ঠিক সময়মতো মিললাম না, জানো?”
শারমিন সামান্য ভীত গলায় বলল, “কী?” মনে হচ্ছিল, কথাগুলো আরও স্পষ্ট করে বলা দরকার।
“তুমি যখন এসেছিলে,” সে শান্ত কণ্ঠে বলল, “আমার চোখ first sight-এ… যেন বৃষ্টি এসে শুকিয়ে দিচ্ছে আমার মন।”
শারমিন অচেতনের ভেতর হাতুড়ি নেড়ে দিল; এ কি সত্যিই বলছে? তার ভেতর এক মৃদু সরিক বেদনা জাগল—কিছু মুহূর্তে এতটুকু পরিচিত? কিন্ত শত ঝড়েও এতটা শান্ত কেমিওনার কথা!
সে কণ্ঠ করে উঠল, “আমি… আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাকে চিনবে না। তুমি তো না জানো, আমি কীভাবে অপরাজেয় মুখোশ পরে হেঁটেছি জীবন জুড়ে।”
ভদ্রলোক বেয়ার্স খুঁজে দিয়ে বলল, “চিনতে না পারাটা তো ভুলের ব্যাপার—চিনে নাও।”
তার চোখ দুটি উজ্জ্বল হয়ে উঠলো, হ্রদয়ে উত্তেজনার ঢেউ উঠল। সে গভীর নিশ্বাস নিলো, যেন বিষন্নতা আর বিচ্ছেদের বোঝা কিছুটা লাঘব হচ্ছে।
“ঝড়ের পর তো আকাশ পরিষ্কার হয়,” ভদ্রলোক হেসে বলল, “তোমার চোখে আজ সেই পরিষ্কার ঋতু দেখতে পাচ্ছি।”
শারমিনের মনেই তখন প্রশ্নের মিছিল চলে—এ কি প্রেম? নাকি আরও গভীর কোনো সম্পর্ক? কোন শব্দ তার অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে পারবে? সে ভাবতে লাগল, “আমি কি সত্যিই ভালোবাসা বুঝি?”
সে নিজেকে জিজ্ঞেস করল, “তোমার চোখ কেন এতো আন্তরিক?” একটি অদ্ভুত খুশির স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে গেল তার শরীরে।
ভদ্রলোক উঠে দাঁড়িয়ে শারমিনের কাছে এসে বলল, “আজ থেকে আমাদের গল্প শুরু।”
শারমিনের বুক ধক করে উঠল, “গল্প?”
“হ্যাঁ,” সে নরম কণ্ঠে বলল, “একটা গল্প, যেখানে দুটো হৃদয় মিলবে—চোখে চোখ রেখে, ভাবনার কথা বিনিময় করে, ভালোবেসে।”
শারমিন মাথা কুলিয়ে বলল, “ভালোবাসাটা কি সহজ?”
সে একটু থেমে, আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল, “সহজ না–কিন্তু করবার মতো।”
শারমিন হেসে স্বীকার করল, “আমিও কিন্তু ভয় পাই অসঙ্গতির… কোনো ভুল হলে?”
“তবুও,” ভদ্রলোক কনিষ্ঠস্বরে বলল, “ভুল থেকেই তো শেখা যায়।”
তিনি তাঁর হাত খুলে শারমিনের হাতে দিলেন। হালকা স্পর্শেই সারাটি দেহে শিহরণ নেমে এল। শারমিন দেখল, ভদ্রলোকের হাত কেমন নিশ্চিন্ত—ভুল হলেও কাউকে আঁকড়ে রাখার বেশী চাহিদা নেই, শুধুই বিশ্বাস আর আশা নিয়ে।
শারমিন বম্বল গলায় বলল, “ঠিক আছে… আমি তোমার গল্পে অংশ নেব।”
ভদ্রলোকের চোখে উজ্জ্বল এক চঞ্চলতা danced করল, “শুরু করছি?”
সে মাথা নেড়ে বলল, “হ্যাঁ।”
তারা একসঙ্গে হাঁটতে শুরু করল—প্রতিটি পদক্ষেপে শোনা যাচ্ছে হৃদয়ের তাল, যেখানে প্রত্যেকটা স্পন্দন বলছে: “এই ঘটনা, এই অনুভূতি, এই গভীর বিশ্বাস, এটাই আমাদের ভালোবাসার গল্প।”